নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) পরিচালিত ‘স্মার্ট প্রিপেইড মিটারিং ফেজ-২’ প্রকল্পের দুটি প্যাকেজে ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। ১,৩৮,০০০ স্মার্ট মিটার কেনার বড় টেন্ডার বাতিল করে রি-টেন্ডারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও একই প্রকল্পের অধীনে ৫১,৮০১টি মিটার কেনার ছোট টেন্ডারটি বাতিল না করে আগের স্পেসিফিকেশনেই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির সুপারিশে বড় প্যাকেজের টেন্ডার বাতিল করে নতুন স্পেসিফিকেশনে রি-টেন্ডার করা হলেও একই প্রকল্পের ছোট প্যাকেজে এই নীতি প্রযোজ্য হয়নি। ওজোপাডিকো বোর্ড এ বিষয়ে অস্বচ্ছ ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, নতুন প্যাকেজে এবার তিনটি কোম্পানি টেন্ডারে অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ‘চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেনঝেন স্টার ইন্সট্রুমেন্ট’। পূর্বে এই কোম্পানিটি ডেমো পর্যায়ে বাদ পড়েছিল। কারণ তাদের মিটারে আল্ট্রাসনিক ওয়েল্ডিং না থাকায় সিলিং দুর্বল ছিল এবং গ্রাহকের অসদাচরণ রোধে তা অযোগ্য বিবেচিত হয়েছিল। অথচ এবার তাদের মিটার কৃতকার্য হয়েছে।
শেনঝেন স্টারের সঙ্গে প্রকল্প পরিচালকের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ রয়েছে, এই সংস্থার পুনর্বাসনে ভেতর থেকে সহায়তা করছেন এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা। একইসঙ্গে বোর্ড সদস্য রফিউল ইসলাম, যিনি সাংবাদিক পরিচয়ে ওজোপাডিকোর পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন। তিনি এই দরপত্র চালু রাখতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। তার পছন্দের কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত লাভের চেষ্টা চলছে ।
এদিকে, বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির ব্যয় সংকোচন নীতির নির্দেশনা দিলেও, ওজোপাডিকো সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে শুধুমাত্র একটি প্যাকেজে টেন্ডার অব্যাহত রেখেছে। অথচ অন্যান্য প্রকল্পে এই নীতির কারণে ১০টিরও বেশি টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে, যাতে বহু ঠিকাদার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ওজোপাডিকোর পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়কে জানানো হচ্ছে, নতুন স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ভালো মানের মিটার পাওয়া যাচ্ছে না এমন যুক্তিতে টেন্ডার চালু রাখা হয়েছে। তবে এতে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতি এবং নৈতিকতার প্রশ্নে বড় ধরণের দ্বৈতনীতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a comment