কক্সবাজার সংবাদদাতা:
কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলায় পরিবারের অবাধ্যে ভালবেসে বিয়ে করলেও ৩ মাস না যেতেই সংসারের সুখ সইল না নববধু হিরার ভাগ্যে। বেকার এবং মাদকাসক্ত স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে বিদ্যুৎ শর্ট দিয়ে মারা হল হিরা মনিকে।
মৃত্যুর পরে গোসল করাতে গিয়ে শনাক্ত হলো হত্যার রহস্য । পিঠে, হাতে, গায়ে বিদ্যুৎ শর্টের দাগ দেখা গেছে।
জানাজা শেষে নিহত গৃহবধুকে দাফন করা হলেও অভিযুক্ত পলাতক স্বামীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানায় স্থানীয়রা।
সুত্র জানায়, ১৪মে রাতের প্রথম প্রহরে টেকনাফের হ্নীলা মৌলভী বাজারের রোজার ঘোনার হাজী নুর আহমদের বাড়িতে পুত্র আব্বাস উদ্দিনের নব বিবাহিত স্ত্রী লুলুয়ার মরজান হিরামনির (১৮) গলায় কাপড় প্যাঁচানো মৃতদেহ দেখতে পায়।
ওইদিন রাত ২টার দিকে লোক মারফতে হিরামনির হ্নীলা পূর্ব সিকদার পাড়ার পরিবারে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভাই-বোনসহ অন্যান্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হিরার নিথর মৃতদেহ দেখতে পায়।
বিষয়টা টেকনাফ থানা পুলিশকে অবহিত করলে সকালে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ পোস্ট মর্টেমের জন্য উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ঘাতক স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ ও পলাতক রয়েছে। পোস্টমর্টেম শেষে মৃতদেহ বিকালে বাড়িতে নেয়া হয়। বাদ মাগরিব হ্নীলা শাহ মজিদিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। শ্বশুর বাড়িতে নববধু খুনের ঘটনায় উভয় পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হ্নীলা মৌলভী বাজার রোজারঘোনার হাজী নুর আহমদের কলেজ পড়ুয়া আব্বাস উদ্দিন এবং হ্নীলা পূর্ব সিকদার পাড়ার সাবেক শিক্ষক মীর কাশেমের মাদ্রাসায় পড়ুয়া মেয়ে লুলুয়ার মরজান হিরামনি (১৮) এর মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের জেরধরে দুজনই পালিয়ে চলতি বছরের ২১শে জানুয়ারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের ৩মাস না যেতেই বেকারত্বের কারণে তাদের সংসারে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে স্বামী নববধুকে বাড়িতে একা রেখে গভীর রাতে বাড়িতে ফিরে। তা নিয়ে গৃহবধু হিরা বলতো, আমি সব ছেড়ে তোমার কাছে পালিয়ে এসেছি এই কর্মকান্ডের জন্য নাকি? এ প্রশ্ন করলে দুজনার মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও কলহের সৃষ্টি হয়।
নিহত গৃহবধুর শ্বশুড় হাজী নুর আহমদ বলেন, কিভাবে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটল আমরা এখনো বুঝতে পারছিনা।
নিহত হিরার ভাসুর জমির উদ্দিন বলেন, আমি মৌলভী বাজার ষ্টেশনে দোকান করি। গতকাল বিকালে কক্সবাজার মালামাল কিনতে আসি। গভীর রাতে বাড়ি থেকে হঠাৎ ফোন করে বলে ছোট ভাই আব্বাসের বউ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছে বলে জানায়। কি কারণে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা বুঝে উঠতে পারছিনা। তবে ছোট ভাই আব্বাসের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ এবং সে গা ঢাকা দেওয়ায় এই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারিনি।
এই বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সংবাদকর্মীদের জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছি। এই বিষয়ে লিখিত এজাহার হাতে এলে তদন্ত স্বাপেক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাধারণ মানুষ ঘাতক পাষান্ড স্বামীকে দ্রুত
গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।
Leave a comment