পাবনা সংবাদদাতা:
ইছামতি নদী উদ্ধার প্রকল্প ও খনন কাজের আটুয়া হাউজপাড়া স্কুলের সামনের অংশে (শহর অংশ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডিজি সরোয়ার ১৪ মে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে সরেজমিনে পরিদর্শন করতে আসেন। প্রকল্প কাজের অগ্রগতি এবং ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলনের কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন এর সভাপতি দৈনিক সিনসা সম্পাদক এসএম মাহবুব আলম, রিভারাইন পাবনা জেলা শাখার সভাপতি নদী গবেষক ড.মুনসুর আলম, সিএনএফ টেলিভিশনের চেয়ারম্যান খালেদ আহমেদ, বেলা’র নেটওয়ার্ক সম্পাদক সাংবাদিক শফিক আল কামাল, নদী উদ্ধার আন্দোলন কর্মী ও পাবনা আদর্শ গালর্স হাই স্কুলের (অব:)প্রধান শিক্ষক আমানুল্লাহ খান প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত আলোচনায় সেনাবাহিনীর ডিজি সরোয়ার আশা প্রকাশ করেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ইছামতি নদীর শহর অংশের খনন কাজ শেষ হবে।
উদ্যোগী মন্ত্রণালয়-পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়/ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজটি বাস্তবায়ন করছে ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
প্রকল্পের সময়কাল ধরা হয়েছে এপ্রিল ২০২৪ হতে জুন ২০২৭।
কাজের ধরন:
ইছামতি নদী ও সংযোগ খালের উপর বাঁধা অপসারন ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ।
প্রকল্প কাজের অঙ্গসমূহ,ভূমি অধিগ্রহণ/ক্রয় ১১০.২১৬ কিঃমিঃ ইছামতি নদী পূনঃখনন (সংযোগ খাল, রূপপুর চ্যানেল, সুতিখালী নদী ও ভারারা খালসহ) ইছামতি নদীর উভয় তীরে ১০ কিঃমিঃ রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, ইছামতি নদীর উভয় তীরে ১০ কিঃমিঃ ড্রেন নির্মাণ,আর্থিক অগ্রগতি- ১১.৪৭% (৩২.০০ কোটি, নদী খনন), ০% রিটেনিং ওয়াল এবং ড্রেন বাস্তব অগ্রগতি-২১.৫১% (৬০.১২ কোটি, নদী খনন), ০% রিটেনিং ওয়াল এবং ড্রেন। ডিপিপি ব্যয়-২৭৮.৮৯ কোটি (নদী খনন), ২৩৬.৯০ কোটি (রিটেনিং ওয়াল), ১২৪.১৮ কোটি (ড্রেন)।
প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সমস্যাসমূহ দেখা দিয়েছে: বিভিন্ন অংশে তারমধ্যে মাটির ব্যবস্থাপনা।
ইছামতি নদী পুণঃখননের মাটি/বালি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় দ্রুত খননকৃত/স্তুপকৃত মাটি/বালি ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
এছাড়াও নদীর তীরবর্তী চেইনেজ ১৫.০০০ কিঃমিঃ হতে ১৮.০০০ কিঃমিঃ (৩ কিঃমিঃ কম/বেশি) এর মধ্যে এলজিইডি এর কার্পেটিং রাস্তা এবং মানুষজনের বসতবাড়ী থাকায় খননকৃত মাটি রাখা সম্ভবপর হচ্ছেনা।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ২য় পিআইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিধি মোতাবেক খননকৃত মাটি দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করতে হবে।
বর্তমানে খননকৃত মাটি/বালি যে নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বাস্তবতার নিরিখে তা সময় স্বাপেক্ষ। এই নিলামের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে যে পরিমাণ খননকৃত মাটি/বালি স্তুপ হয়েছে তা যেকোন সময়ে সামন্য বৃষ্টিপাতে নদীর মধ্যে/ফসলি জমি/বসতবাড়ি’তে চলে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে খনন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে খননকৃত মাটি/বালি তাৎক্ষনিক নিলামের (স্পট নিলাম) ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য যে, খননকৃত মাটি অদ্যাবধি অপসারণ করা হয়নি। জগন্নাথপুরে ইছামতি নদী পুণঃখনন কাজে কিছু কিছু স্থানে Bank Line ধসে যাওয়া। ইছামতি নদী পুনঃখনন (চেইনেজ ৩৩.৭৭২ কিঃমিঃ হতে ৫.০০ কিঃমিঃ পর্যন্ত) কাজের কোন কোন স্থানে খারাপ Soil condition এবং Lateral seepage এর কারণে ডিজাইন Bank line ধসে যাচ্ছে।
তাছাড়াও Bank Line ধসে যাওয়ার কারনে কোথাও কোথাও পার্শ্ববর্তী রাস্তা, বাড়ী/অবকাঠামো, বাজার, মসজিদ, কবরস্থান, মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভবনা থাকায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাবনার কাছে বারংবার পত্র মারফত দিক নির্দেশনা চাওয়া হলেও অদ্যাবধি প্রদান করা হয় না।
এমতাবস্থায়, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে উল্লেখিত স্থাপনা ও রাস্তা ভাঙ্গন রোধ করার লক্ষে উক্ত এলাকাসমূহে প্রয়োজনীয় Protective Work এর ব্যবস্থা করা বা Design Modification প্রয়োজন রয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে ।
ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন এর কর্মীরা সকলেই সেনাবাহিনীর কাজকে আরো বেগবান করে ইছামতি নদীকে স্রোতস্বিনী নদী এবং সৌন্দর্যময় পাবনা জেলা উপহার দেওয়ার আহবান করেন।
Leave a comment