Thursday , 22 May 2025
Home ঢাকা বিভাগ, অপরাধ সংবাদ প্রকাশ্যে গুনেগুনে ঘুষ নেন ধামরাই সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সহকারি রহমান
অপরাধ সংবাদ

প্রকাশ্যে গুনেগুনে ঘুষ নেন ধামরাই সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সহকারি রহমান

সাভার সংবাদদাতা :

ধামরাই কালামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস চলাকালীন সময়ে অফিস সহকারী আবদুর রহমানের টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালের দিকে প্রকাশ্যে এমন টাকা নেওয়ার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রকাশ্যে এমন টাকা লেনদেনের ভিডিও দেখে নানা মন্তব্য করছেন সাধারণ মানুষ। আপন নামে এক আইডি থেকে মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ নিবে এটা তো তাদের জন্মগত অধিকার’।

মো. জসিম নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘ভূমি এবং সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এগুলাই চলে কিন্তু এর প্রতিবাদ নেই’।

কয়েকজন দলিল লেখক একই ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, এগুলা সরকারি ফি নেওয়া হচ্ছে।

ভিডিওর সূত্র ধরে বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন দলিল লেখক ও দলিল দাতা-গ্রহীতার সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারি ফি টাকার ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয় কালামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে।

দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারি ফি ৭০০-৮০০ টাকা। কিন্তু দিতে হয় ১৫০০০ টাকা। দলিল গ্রহীতা যদি ধামরাইয়ের বাইরের হয় তাহলে আরও বেশি টাকা দিতে হয় বলে জানা গেছে।

তারা আরও বলেন, সাফ কবলা দলিলে সেরেস্তা বাবদ ১০০০ টাকা, উচ্চ মূল্য দলিলে প্রতি লাখে ১০০ টাকা করে, দানপত্র দলিলে সেরেস্তা ১০০০ টাকা, হেবা ঘোষণা দলিলে সেরেস্তা ১০০০ টাকা করে অতিরিক্ত দিতে হয়। এ ছাড়াও প্রতি শতাংশে ৪০ টাকা করে কমিশন দিতে হয়।

দলিল প্রতি বেশি টাকা এমনকি শতাংশ প্রতি কমিশন নেওয়ার অভিযোগ আছে এই অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে।

একাধিক দলিল লেখক জানান, ‘পাওয়ার দলিলে সেরেস্তা ১০০০ এবং দলিল প্রতি আব্দুর রহমানের হাতে দিতে হয় ৫০০০ থেকে ১০০০০ টাকা। পাওয়ার মর্গেজে রহমানের মাধ্যমে আলোচনা সাপেক্ষে ৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়ে থাকে। পাওয়ার থেকে সাফ কবলা দলিলে রহমানকে দিতে হয় ৫০০০ টাকা। সাব-রেজিস্ট্রারের অন্তরালে প্রতি দলিলে সেরেস্তা বাবদ বাধ্যতামূলক রহমানকে ১০০০ টাকা করে দিতে হয়’।

দলিল প্রতি এসব অতিরিক্ত টাকা দলিল লেখকদের কাছ থেকে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী আব্দুর রহমান নিয়ে থাকেন। কিন্তু দলিল লেখকদের কাছে থেকে দলিল প্রতি এনএন ফি বাবদ ৫৭২ টাকা সরকারি ফি নেওয়ার কথা থাকলেও এভাবেই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন বলে জানান দলিল লেখকরা। এ ছাড়া টাকা নেওয়ার কোনো রশিদও দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে দলিল লেখকদের।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে কালামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সহকারী আব্দুর রহমান টাকা লেনদেনের বিষয়টি না বলে এড়িয়ে যান।

তিনি বলেন, এনএন ফি বাবদ ৫৭২ টাকা নেওয়া হয়। এর বেশি কোনো টাকা নেওয়া হয় না। এই টাকার কথা সবাই জানে। এটা সরকারি ফি।

এ বিষয়ে কালামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসার নাজমুল হাসান বলেন, এনএন ফি নামে একটি সরকারি ফি আছে সেটা নিয়ে থাকেন। তাৎক্ষণিক কেউ রশিদ নেন না। ওই ফি হলো ৫৭২ টাকা যা রশিদের মাধ্যমে আদায় করার কথা। আমরা রশিদ তৈরি করেছি। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে অনেকেই রশিদ নেন না। তবে কেউ এক সাথে দুটি দলিল দিলে তখন টাকা বেশি দেখা যায়।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Categories

Related Articles

অপরাধ সংবাদ

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে এএসপির বিরুদ্ধে মামলা

নিউজ ডেস্ক : ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে...

অপরাধ সংবাদ

গোয়ালন্দে ৫ লিটার দেশীয় মদসহ মাদক ব‍্যবসায়ী গ্রেফতার

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ৫ লিটার দেশীয় মদসহ এক মাদক ব‍্যবসায়ীকে...

অপরাধ সংবাদ

গোয়ালন্দে ৭২ পিচ ইয়াবাসহ গ্রেফতার ১

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ৭২ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ এক যুবককে...

অপরাধ সংবাদ

মুন্সীগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক ৩

মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়ায় অভিযান চালিয়ে পিস্তলের গুলিসহ বিভিন্ন ধরনের...