নিউজ ডেস্ক:
কলেজ প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিদিন রাত ৯টার মধ্যে ইডেন ক্যাম্পাসের মূল ফটক বন্ধ হবে। রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হলে হাজিরা দিতে হবে। কলেজ প্রশাসনের এই নিয়ম সংশোধন করে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের মূল ফটক খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কলেজের আবাসিক হল এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
কয়েকদিন আগে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন আবাসিক হলের নীতিমালা করেছে কলেজ প্রশাসন। এসব আইনের কিছু অংশের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
নতুন নিয়মে কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী কক্ষে রাখা যাবে না। কক্ষে হিটার, রাইস কুকার, হেয়ার স্ট্রেইটনার, ইলেকট্রনিক কেটলি, রুম হিটার, এয়ার কুলার, ফ্রিজার ধরা পড়লে ওই ইলেকট্রনিক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং জরিমানা করা হবে। ফ্রিজার, এয়ারকুলার, রুম হিটার- ১০০০ টাকা জনপ্রতি, রাইসকুকার, হিটার, ওভেন, ইনডাকশন চুলা ৫০০ টাকা, কেটলি, হেয়ার স্ট্রেইটনার, ইস্ত্রি, ওয়াটার হিটার পাওয়া গেলে ৩০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
এই নিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসে বাজেট ফ্রেন্ডলি লন্ড্রি সিস্টেম চালু করতে হবে।
নতুন নিয়মে মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা মেয়াদকালের মধ্যে শেষ না হলে এবং তা তিন মাস অতিক্রম করলে ছাত্রীদের ব্যবস্থাপনা ফি এর ৫০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে, ৫ মাসের ঊর্ধ্বে হলে পূর্ণ ফি পরিশোধ করতে হবে।
এই নিয়নের বিরোধিতা করে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, পাঁচ মাসের ঊর্ধ্বে গেলে ৫০ শতাংশ টাকা রাখতে হবে। অন্যথায় মাস হিসাব করে টাকা নিতে হবে। সময় শেষ হওয়ার আগে ব্যাংক ড্রাফটের জন্য চাপ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
নতুন নিয়মে হোস্টেলে ছুটি চলাকালীন বাড়ি যেতে বাধ্য থাকবে এবং ছুটি শেষে হলে ফেরত আসবে। ছুটিতে যাওয়ার আগে এবং শেষে হোস্টেলে ফেরত আসার পর সংরক্ষিত খাতায় সই করতে হবে। আবাসিক ছাত্রীদের এক টানা ১৫ দিনের অধিক ছুটি মঞ্জুর হবে না। শিক্ষার্থীরা এই নিয়মের বিরোধিতা করে বলছেন, নিয়ম সংশোধন করে দুই ঈদের ছুটিতে বাধ্যতামূলকভাবে হল খোলা রাখতে হবে।
নতুন নিয়মে প্রত্যেক ছাত্রীর ডাইনিং-এ খাওয়া বাধ্যতামূলক। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার নিয়মানুযায়ী ডাইনিং হল থেকে সংগ্রহ করে সেখানেই খেতে হবে, কক্ষে নেওয়া যাবে না। শিক্ষার্থীরা বলছে, এই নিয়ম মানি না।
নতুন নিয়মে কোনো ছাত্রী হোস্টেলে অবস্থানকালে রাতে অসুস্থ হলে প্রয়োজনবোধে স্থানীয় অভিভাবকের উপস্থিতিতে রাতে বাইরে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, অতিরিক্ত অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয় অভিভাবকের জন্য বসে থাকতে হবে? হলের দায়িত্বরত শিক্ষকদের মেয়েরা অসুস্থ হলে অবশ্যই পাশে থাকতে হবে।
নতুন নিয়মে হোস্টেলে কোনো প্রকার মূল্যবান সামগ্রী আনতে পারবে না, যেমন (স্বর্ণালঙ্কার, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, মোবাইলসহ যে কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস, অতিরিক্ত টাকা ও অন্যান্য)। যদি উল্লিখিত সামগ্রী হারানো যায় কর্তৃপক্ষ তার জন্য দায়ী থাকবে না।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, পড়ালেখার সঙ্গে পুরোপুরিভাবে জড়িত জিনিসপত্র হলে রাখতে দিতে হবে। চুরি তো দূরের কথা, হলে ১০০ ভাগ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
নতুন নিয়মে হোস্টেলের উপযুক্ত নিয়ম ভাঙ্গা অথবা বিশৃঙ্খলার কারণে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় সিট বাতিল, স্থানান্তর অথবা যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে সিট বাতিল করতে হবে। অযথা হয়রানি করা যাবে না।
শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহের মধ্যে আরও রয়েছে, হলের বাৎসরিক ফি যা বাড়ানো হয়েছে তা অবশ্যই কমাতে হবে। হলে প্রত্যেক মেয়ের জন্য বাধ্যতামূলক চেয়ার-টেবিল এবং প্রত্যেক রুমের জন্য বাধ্যতামূলক লাইট-ফ্যান অকেজো হলে তা পরিবর্তন করে দিতে হবে। টিভি রুম টিভি রুমের মতোই ব্যবহার করতে হবে। পড়াশোনার জন্য রিডিং রুম ব্যবহার করতে হবে।
Leave a comment