রাজবাড়ী সংবাদদাতা:
রাজবাড়ী জেলা শহরের বড়পুলে অবস্থিত ডা. রতন ক্লিনিকে এক সিজারিয়ান রোগীর অপারেশনের পর প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে দফারফা করেছে ডা. রতন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এ ক্লিনিকে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল থেকে ডা. রতন ক্লিনিকে ওই রোগীকে আনা হয়। এরপর ক্লিনিকে তার অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। ডা. রইসুল ইসলাম (রতন) এর তত্ত্বাবধানে এ অপারেশন করা হয়। অপারেশনে সহযোগিতা করেন ডা. নিয়ামত উল্লাহ ও ডা. রাবেয়া আক্তার।
অপারেশনের পর একলামশিয়া জনিত জটিলতা দেখা দিলে রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়ে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে দ্রুত তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর রাতেই রোগী মারা যায়।
ডা. রতন ক্লিনিকে ভর্তি করা সদর উপজেলার কাজিবাঁধা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘১২ হাজার টাকা চুক্তিতে শাহানাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে থেকে এনে সিজারিয়ানের জন্য ডা. রতন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়ে। আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে দ্রুত তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর রাতেই তিনি মারা যায়।
এ ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার সকালে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এবং তারা রোগীর স্বজনসহ আলোচনায় বসেন। এক পর্যায়ে তারা ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের ৪ লাখ টাকা প্রদান করেন। যে কারণে রোগীর স্বজনরা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. রতন ক্লিনিকের ম্যানেজার (অ্যাডমিন ও ফিন্যান্স) আকলিমা আক্তার তমা বলেন, ‘সদর হাসপাতাল থেকে রোগীকে ক্লিনিকে আনা হয়। এখানে সিজার করার পর তার অবস্থা খারাপ হলে তাকে ফরিদপুরে পাঠানোর পর তার মৃত্যু হয়।’
ক্লিনিকের ম্যানেজার আমজাদ হোসেন বলেন, ‘রোগীর মৃত্যুর পর আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।’ তবে কত টাকায় সমাধান হলো তা তিনি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এদিকে রাজবাড়ী সিভিল সার্জন ডা. এস. এম. মাসুদ জানান, কোনো লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন না তিনি। তিনি নিজেও শুনেছেন ইতোপূর্বে ওই ক্লিনিকে সিজারিয়ানের পর একাধিক রোগির মৃত্যু হয়েছে। তবে রোগীর স্বজন ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে ফেলায় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
শাহানা রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের মাটিপাড়া গ্রামের মো. ফারুক মন্ডলের স্ত্রী। সিজারিয়ান অপারেশনের পর শাহানার নবজাতক ছেলে সুস্থ রয়েছে। তার ইতোপূর্বে আরও ৪টি কন্যা সন্তান রয়েছে।
Leave a comment