নিউজ ডেস্ক:
মামলা প্রত্যাহারে ৩ সপ্তাহের আল্টিমেটাম শিবিরের
চব্বিশের জুলাইয়ে সংঘটিত আওয়ামী গণহত্যার বিচার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও ফ্যাসিস্ট আমলে ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ সব রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে জুলাই গণহত্যার বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি, এটিএম আজহারের মুক্তি ও ছাত্রশিবিরসহ সব রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করা না হলে ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নেমে দাবি আদায় করার হুমকি দিয়েছে শিবির।
বুধবার (২২ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘২০০৮ সালে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করে। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনেও নিরস্ত্র মানুষের ওপর চালায় বর্বর গণহত্যা।
ছাত্রজনতার বীরত্বগাঁথা সংগ্রামে প্রায় দুই সহস্রাধিক শহীদ এবং অগণিত আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের রক্তের ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু সেই গণহত্যার বিচার সম্পন্নকরণে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের উদাসীনতা লক্ষ্য করছি। অপরাধীদের বিপুল অর্থের বিনিময়ে মুক্তি প্রদান এবং পুনর্বাসনের চেষ্টাও চলছে নানা মহল থেকে।’
তারা আরও বলেন, ‘জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে দেশপ্রেমিক আলেম ও রাজনীতিবিদদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মিথ্যা অভিযোগে ২০১২ সালে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ভিত্তিহীন ও প্রহসনমূলক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
নেতারা বলেন, যেখানে একজন সাক্ষী ৭ কিলোমিটার দূর থেকে ঘটনাদর্শী দাবি করে, অপরজন নিজেকে ক্লাসমেট বললেও ডকুমেন্ট অনুযায়ী তিনি ভর্তি হন ভিকটিম কলেজ ছাড়ার দুই বছর পর। এতেই প্রমাণিত হয়—মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে, বহু রাজবন্দি মুক্তি লাভ করেছেন। ইতঃপূর্বেও সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে তিনি ন্যায়বিচার পাননি। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও মামলা নিষ্পত্তির নামে বিভিন্ন কারণ উপস্থাপন করে শুনানি বারবার পেছানো হচ্ছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে ছাত্রশিবির ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্মম নিপীড়নের লক্ষ্যবস্তু। নাগরিক অধিকার হরণ করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এক অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা। হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর চালিয়েছে অকথ্য নির্যাতন। ঘরোয়া প্রোগ্রাম, মসজিদ, এমনকি নামাজরত অবস্থায়ও তুলে নিয়ে গুম-হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে ১০১ জনকে শহীদ, সহস্রাধিককে পঙ্গু এবং অসংখ্য নেতাকর্মীদের গুম করা হয়। বর্তমানেও ৭ জন ভাই গুম অবস্থায় রয়েছে। এখনও প্রায় ১১ হাজারের অধিক মিথ্যা মামলা বলবৎ আছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
ভারতের ওয়াকফ বিল বাতিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান মামুনুল হকের
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে এনসিপির বিক্ষোভ
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের ৮ মাস অতিক্রান্ত হলেও আন্দোলনে অগ্রভাগে থাকা অংশীজনদের মিথ্যা মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। এটি জাতির জন্য লজ্জার এবং গাদ্দারির শামিল। আমরা অবিলম্বে পল্টন, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্য দ্রুত সম্পাদনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
পাশাপাশি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে জুলাই গণহত্যার বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি, এটিএম আজহারের মুক্তি ও ছাত্রশিবিরসহ সব রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আমরা ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নেমে দাবি আদায় করতে বাধ্য হবো।
Leave a comment