স্টাফ রিপোর্টার (কক্সবাজার):
মহেশখালীর স্থানীয় কবির বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসা ছিলেন কুতুবজোমের কামিতারপাড়া এলাকার জেলে মোহাম্মদ কাছিম আলী (৩৫)। বাজারে দা, ছুড়ি নিয়ে মামা আর মামাতো ভাই অতর্কিত হামলা করে কাছিম আলীকে। প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে নিজের বাসায় ডুকে পড়লে সেখানে ঢুকে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় মামা আর মামাত ভাইয়েরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) তারিখ সকালে ফিশিং বোটের দাদনের টাকা নেওয়া নিয়ে মামাত ভাই ফুফাত ভাইদের মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে আপন ভাগিনাকে মারতে পরিকল্পনা করে মামা গফুর মিয়া।
সকালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামা গফুর ও তার ছেলে সারজিদ, শাহেদ খান, কামরুল হাসান, রাসেল সহ আরও কয়েকজন মিলে কাছিম আলীকে কবির বাজার থেকে ধাওয়া করে। প্রাণ বাঁচাতে কাছিম আলী দৌড়ে নিজ বাড়িতে ফিরে গেলে সেখানে গিয়ে তার উপর হামলা চালানো হয়। এলাকাবাসীর চোখের সামনে ঘটে রক্তাক্ত হামলা।
স্থানীয়রা রক্তাক্ত কাছিম আলীকে উদ্ধার করে দ্রুত মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে পথিমধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানায়, নিহতের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তদের পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। মহেশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাইছার হামিদ জানিয়েছে, দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে অভিযান শুরু হয়েছে।
ঘটনার পর কাছিম আলীর মা রাশেদা বেগম গণমাধ্যমকে জানান, ‘কাছিম আলীর বাড়িতে ঢোকার পর গফুর মিয়া, কামরুল হাসান, সাহেদ খান, সারজিদ আলম, ইরফান,সুফিয়া ও শামীমা সহ কয়েকজন নারী মিলে আমার ছেলেকে ঘিরে ফেলে। সামান্য কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা কাছিম আলীকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রেখে চলে যায়।
নিহত কাছিম আলীর মা আরও বলেন, ‘সুফিয়া, শামিমা ও অজ্ঞাত আরও এক নারী হামলায় সরাসরি অংশ নেয়’। নিহতের পরিবারটির দাবি এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ঘাতক গফুর মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় উশৃঙ্খল আচরণ করে আসছে। পূর্বেও তারা জেলেদের সঙ্গে নানা অসদাচরণ ও মারধরের ঘটনায় জড়িত ছিল। এ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
নিহত কাছিম আলী স্থানীয় নুরুল আলম প্রকাশ কালা মিয়ার পুত্র। একজন জেলে ও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন কাছিম আলী, তার মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। স্ত্রী ছাড়াও তার রয়েছে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। পরিবারজুড়ে এখন শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বামীর এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডে বাকরুদ্ধ কাশেমের স্ত্রী। সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত।
Leave a comment