গাইবান্ধা সংবাদদাতা:
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। এ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাত্র দুজন। এতো মানুষের চিকিৎসা সেবা দেওয়া মাত্র দুজন ডাক্তার দ্বারা দুরূহ ব্যাপার। হাসপাতালের যারা নার্স হিসাবে দায়িত্বরত আছেন এদের বেশীর ভাগ স্থানীয়। তাদের আচরণে ডাক্তার রোগী সবাই অসন্তুষ্ট। রোগী ও রোগীর স্বজনেরা এসব স্থানীয় নার্সদের নিকট এক ধরনের জিম্মি।
তাছাড়া টেকনিশিয়ান ও কর্মচারি সংকট, যন্ত্রপাতি অকেজো, টয়লেট বাথরুম অপরিচ্ছন্ন, বাহিরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নোংরা, হাসপাতালের চারপাশে ব্যবহৃত ফটলানো ময়লা আবর্জনায় বেড়েছে মশার উৎপাত, দিন-রাতে মশা মাছি ভো ভো করে। নিম্নমানের খাবার ও পরিমানে কমে দেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলতে থাকলেও নজরে নিচ্ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী না থাকলেও প্রতিদিন বারতি রোগী দেখিয়ে মাস শেষে খাদ্যের বিল ভাউচার করে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ ঠিকাদার গং, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পকেটে ঢুকায়।
কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতায় এমন কি জরুরি বিভাগে ও হাসপাতালের বেডে কুকুর থাকার ঘটনাও প্রতিনিয়ত ঘটছে। রাতে যারা হাসপাতালটিতে দায়িত্বে থাকেন তারা বেশীর ভাগ সময় ঘুমিয়ে ডিউটি শেষ করেন এমন অভিযোগও রয়েছে ভুক্তভোগীদের।
এছাড়াও হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সঠিক সময়ে হাসাপাতালে না আসা, গর্ভবর্তী মা হাসপাতালে ভর্তি হলেই দালাল চক্রের মাধ্যমে নার্সদের পরিচালিত ক্লিনিক অথবা বাসায় নিয়ে গর্ভপাত বা ডেলিভারি করে অর্থ হাতিযে নেওয়া, হাসপাতালের প্রতিদিনের ঔষুধ চুরি সহ সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ করেছেন সেবা প্রত্যাশী শত শত মানুষ।
সময়ের ব্যাবধানে অনিয়মের মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যাতে করে এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কাউকে কিছু বলার নাই, কেউ দেখার নাই। ইচ্ছামতো চলছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। সংকট দেখিয়ে সরবরাহ দেয়া হচ্ছে না শিশুদের ক্যানোলা সহ প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী।
এসকল অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারি ও অভিযুক্ত নার্সরা গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমাহীন এসব অনিয়মের অভিযোগ তদন্তসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং স্থানীয় নার্স ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনত্র বদলি করে স্থানীয় সেবা প্রত্যশীদের সেবা প্রদানের দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল। হাসপাতালটির এসব অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে লাগাতার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবি ও মানবিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
Leave a comment