মনোতোষ হাওলাদার, বরগুনা:
বরগুনায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশ্যে নগদ ১ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ক্রেতা সেজে দোকানে প্রবেশ করে “শয়তানের নিঃশ্বাস” (স্কোপোলামিন) দিয়ে কৌশলে এই টাকা নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মামুন মিয়া।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মনোহারী পট্টি এলাকার মেসার্স হাওলাদার স্টোর নামে একটি জাল-দড়ির পাইকারি ও খুচরা দোকানে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনার পর শহরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, চক্রের দুই সদস্য ক্রেতা সেজে হাওলাদার স্টোর নামের দোকানটিতে প্রবেশ করে। এ সময় তারা দোকানের মালিক ভুক্তভোগী মামুনের সঙ্গে দড়ি কেনার কথা বলে বিভিন্ন ধরনের আলাপচারিতা শুরু করেন। পরে দোকান থেকে ৪০ টাকার দড়িও ক্রয় করেন তারা। এরপর চক্রের সদস্যরা পকেট থেকে একটি বিদেশি টাকা বের করে কোন ব্যাংকের মধ্যমে ভাঙানো যাবে তা জানতে চায় মামুন মিয়ার কাছে। এসময়ে পকেট থেকে আরেকটি ১ হাজার টাকার নোট বের করে খুচরো দেয়ার কথাও বলেন তারা। পরে চক্রের সদস্যদের কথা অনুযায়ী ক্যাশ বাক্সের ড্রয়ার খুলে খুচরো টাকা দেয়া শুরু করলে মামুন মিয়ার চোখের সামনেই হাত দিয়ে ১ লাখ টাকার এটি বান্ডিল উঠিয়ে নিয়ে দোকান থেকে দ্রুত চলে যায়।
হাওলাদার স্টোরের কর্মচারী মেহেদী হাসান এবিষয়ে বলেন, দড়ি কেনার কথা বলে দুই ব্যক্তি দোকানে আসে। আমি অন্য আরেকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলছিলাম এসময়ে। প্রতারক চক্রের ঐ দুজন মালিকের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তার এক ফাঁকে ১ লাখ টাকা নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনার দুই এক মিনিট পর টাকা নেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে দোকান থেকে বের হয়ে তাদেরকে খুঁজেও আর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পাশের দোকানের ব্যবসায়ী মোঃ জহির বলেন, শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়ে আমার পাশের ব্যবসায়ীর মামুনের দোকান থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। বরগুনায় প্রায় সময়ই এধরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই এসব ঘটনার সঙ্গে যে চক্র বা সদস্যরা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করে আমাদের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
ভুক্তভোগী হাওলাদার স্টোরের মালিক মোঃ মামুন মিয়া বলেন, দড়ি কেনার উদ্দেশ্য করে দুজন ব্যক্তি আমার দোকানে আসে। এ সময় একটি বিদেশি টাকা দেখিয়ে কোন ব্যাংক থেকে ভাঙাবে এবং কাছাকাছি কোনো ব্যাংক আছে কিনা তা জনতে চায়। পরে তারা পকেট থেকে ১ হাজার টাকার একটি নোট বের করে আমার কাছে খুচরো চায়। তবে খুচরো টাকা দেয়ার সময় আমার চোখের সামনেই ক্যাশ বাক্স থেকে ১ লাখ টাকার একটি বান্ডিল বের করে নিয়ে চলে যায় তারা। পরবর্তীতে দুই এক মিনিট পর বুঝতে পেরে ওই দুজনকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ব্যবসায়ীর থেকে টাকা নেয়ার ঘটনাটি আমরা শুনেছি। তবে ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ জানায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, শয়তানের নিঃশ্বাসের মাধ্যমে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় প্রকশ্যে আসেনা। যখন প্রকাশ হয় তখন অপরাধীরা পালিয়ে যায়। বিশেষ করে অন্য জেলা থেকে এ সব চক্রের সদস্যরা এসে অপরাধ সংঘটিত করে দ্রুত চলে যায়। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুলিশকে জানালে অপরাধীদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে সহজ হয়।
Leave a comment